শনিবার, ২৮ জুন, ২০২৫
রবিবার, ১৮ মে, ২০২৫
বর্ষাকাল মানেই একদিকে স্নিগ্ধ প্রকৃতি, অন্যদিকে অতিরিক্ত আর্দ্রতা, হঠাৎ বৃষ্টি, এবং পানি জমে থাকা রাস্তা। এই সময় শরীরের প্রতিরোধক্ষমতা কমে যায়, এবং বিভিন্ন রোগব্যাধির আশঙ্কা বাড়ে—বিশেষ করে সর্দি, কাশি, জ্বর, জন্ডিস, ফাংগাল ইনফেকশন ইত্যাদি। তাই এই মৌসুমে প্রয়োজন বাড়তি সতর্কতা ও যত্ন।
বর্ষাকালে শরীরের যত্নে অনুসরণীয় কিছু টিপস
🌿 ১. ব্যক্তিগত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখুন
বর্ষাকালে জীবাণুর বিস্তার হয় বেশি।
-
প্রতিদিন গোসল করুন—বিশেষ করে ভেজা বা ঘেমে যাওয়ার পর।
-
ভিজে জামাকাপড় পরে থাকবেন না। এগুলো ফাংগাল ইনফেকশনের কারণ হতে পারে।
-
নিয়মিত হাত ও পা ধুয়ে রাখুন, বিশেষ করে বাইরে থেকে এসে।
🥗 ২. খাদ্যাভ্যাসে সচেতনতা
এই সময়ে পেটের অসুখ, জন্ডিস বা টাইফয়েড হওয়ার ঝুঁকি থাকে।
-
বাইরের খাবার, বিশেষ করে খোলা বা তেলযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলুন।
-
ফুটানো পানি পান করুন।
-
বেশি করে টাটকা ফল, শাকসবজি, আদা-হলুদের মতো রোগ প্রতিরোধক খাবার খান।
-
ভাজাভুজি কমিয়ে সেদ্ধ ও হালকা খাবার খাওয়ার চেষ্টা করুন।
💧 ৩. ত্বকের যত্ন
বর্ষাকালে অতিরিক্ত আর্দ্রতা ত্বকে ফুসকুড়ি বা ফাংগাল ইনফেকশন তৈরি করতে পারে।
-
দিনে দু'বার মুখ পরিষ্কার করুন।
-
শুকনো ও পরিষ্কার তোয়ালে ব্যবহার করুন।
-
ট্যালকম পাউডার বা অ্যান্টি-ফাংগাল পাউডার ব্যবহার করতে পারেন গা ঘামার জায়গাগুলোতে।
🧦 ৪. পায়ের যত্ন
বর্ষায় পা সবচেয়ে বেশি ভেজে এবং কাদাযুক্ত জায়গা দিয়ে চলাফেরার কারণে সংক্রমণ হতে পারে।
-
পানিতে ভিজে গেলে দ্রুত পা ধুয়ে শুকিয়ে ফেলুন।
-
খোলা স্যান্ডেল পরুন যাতে পা শুকিয়ে থাকে।
-
প্রতি রাতে অল্প গরম পানিতে লবণ মিশিয়ে পা ভিজিয়ে রাখলে ভালো ফল পাবেন।
☔ ৫. মৌসুমী রোগ থেকে বাঁচার জন্য
-
ঘরবাড়িতে মশার উপদ্রব থেকে বাঁচতে মশারি বা রিপেলেন্ট ব্যবহার করুন।
-
বৃষ্টির পানি জমে থাকলে দ্রুত সরিয়ে ফেলুন।
-
ঘরবাড়ি শুকনো ও বাতাস চলাচল উপযোগী রাখুন।
🧘♀️ ৬. শরীরচর্চা ও মানসিক সুস্থতা
বর্ষাকালে অনেকেই অলস হয়ে পড়েন, ফলে শরীরে ভারি ভাব আসে।
-
বাড়িতেই কিছু হালকা ব্যায়াম বা যোগব্যায়াম করুন।
-
পর্যাপ্ত ঘুম ও মানসিক বিশ্রাম বজায় রাখুন।
বর্ষাকাল প্রকৃতির সৌন্দর্যে ভরা হলেও এই সময় শরীর ও ত্বকের বিশেষ যত্ন না নিলে অসুস্থ হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়। সঠিক স্বাস্থ্যবিধি ও সজাগতা আপনাকে রাখতে পারে সুস্থ, সতেজ ও সক্রিয়। তাই চলুন, এই বর্ষায় নিজের প্রতি আরেকটু যত্নবান হই।
শুক্রবার, ৯ মে, ২০২৫
🌿 আপনার সুস্থতা, আপনার দায়িত্ব
বর্তমান সময়ে দ্রুতগামী জীবনের কারণে আমরা প্রায়ই নিজের শরীর ও মনের খেয়াল রাখতে ভুলে যাই। অথচ সুস্থ শরীর ও শান্ত মনই হলো জীবনের সেরা সম্পদ। আসুন জেনে নিই কিছু সহজ কিন্তু কার্যকর স্বাস্থ্যকর অভ্যাস যা প্রতিদিন পালন করলে আপনি নিজেই নিজের যত্ন নিতে পারবেন।
🏃♂️ ১. প্রতিদিন নিয়মিত ব্যায়াম করুন
মাত্র ৩০ মিনিট হাঁটা, জগিং বা ফ্রি হ্যান্ড এক্সারসাইজ করলেও শরীর অনেকটাই চনমনে থাকে। এটা শুধু ওজনই কমায় না, হৃদযন্ত্র এবং মানসিক স্বাস্থ্যের ওপরও দারুণ প্রভাব ফেলে।
🥗 ২. পুষ্টিকর ও সুষম খাবার গ্রহণ করুন
আপনার প্রতিদিনের খাবারে রাখুন সবুজ শাকসবজি, রঙিন ফল, ডাল, ডিম এবং কম চর্বিযুক্ত প্রোটিন। চিনিযুক্ত ও প্রক্রিয়াজাত খাবার যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলুন।
😴 ৩. ঘুমকে গুরুত্ব দিন
প্রতিদিন পর্যাপ্ত ঘুম না হলে আপনার মেজাজ, কর্মক্ষমতা ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা—সবই ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ঘুম মানে শুধু বিশ্রাম নয়, এটি একটি পুনর্গঠন প্রক্রিয়া।
💧 ৪. পানি পান করুন নিয়মমাফিক
দেহের কোষগুলোকে সচল রাখতে ও টক্সিন দূর করতে প্রতিদিন অন্তত ২ লিটার পানি পান করুন। কৃত্রিম পানীয় বা সফট ড্রিঙ্কস থেকে দূরে থাকুন।
🧠 ৫. মানসিক স্বাস্থ্যকে অবহেলা করবেন না
প্রতিদিন অন্তত ১৫ মিনিট নিজেকে দিন—চুপচাপ বসে থাকা, মনোযোগী শ্বাস নেওয়া, পছন্দের কিছু পড়া বা প্রিয় সঙ্গীর সঙ্গে কথা বলা আপনাকে মানসিকভাবে সতেজ রাখবে।
🟢 উপসংহার
সুস্থ থাকা কোনো বিলাসিতা নয়, বরং এটি আপনার প্রাপ্য। স্বাস্থ্যকর অভ্যাস গড়ে তুলতে বেশি কিছু লাগে না—শুধু একটু ইচ্ছা আর সচেতনতা। চলুন, আজ থেকেই ভালো থাকার দিকে এক ধাপ এগিয়ে যাই।
মঙ্গলবার, ২৯ এপ্রিল, ২০২৫
আজকের বিষয় “ স্ক্যাবিস “ বর্তমান সময়ে সারা দেশের মানুষের জন্য একটি যন্ত্রনাদায়ক নাম
দীর্ঘ সময় ধরে আমি এবং আমার পরিবারের ছোট বড় সকল সদস্যরাই একটি বিরক্তিকর সমস্যার মধ্যদিয়ে যাচ্ছি। সারা শরীরের চুলকানী, আর শরীরর চিটচিটে অবস্থা। পরিশেষে ডাক্তারের মাধ্যমে যানতে পারলাম এই চুলকানি প্রায় জায়গায় ছড়িয়ে পড়েছে।
হে , বিরক্তিকর বিষয়টি হলো চুলকানি। এই চুলকানির প্রধান কারন হলো স্ক্যাবিস রোগ। তাই অনেক কিছু দেখে বিভিন্ন তথ্য থেকে আজ লেখতে বসলাম স্ক্যাবিস নিয়ে।
স্ক্যাবিস কি?
স্ক্যাবিস (Scabies) একটি চর্মরোগ যা সারকপটিস স্ক্যাবি (Sarcoptes scabiei) নামক একটি অতি ক্ষুদ্র পরজীবী মাইটের (mite) কারণে হয়। এটি চামড়ার নিচে গর্ত করে ডিম পাড়ে এবং এতে তীব্র চুলকানি ও ফুসকুড়ির মতো উপসর্গ দেখা দেয়।
স্ক্যাবিসের প্রধান লক্ষণ:
-
তীব্র চুলকানি, বিশেষ করে রাতে বিছানা ঘুমনর সময় বেড়ে যায়। ছোট ছোট লাল গুটি বা ফুসকুড়ি, আঁচড়ের দাগ।
-
শরীরের বিভিন্ন স্থানে লাল ফুসকুড়ি বা গোটা গোটা দাগের মত
-
হাত ও পায়ের আঙ্গুলের ফাঁকে, হাতের কবজি, কোমরের অংশে, নাভির চারপাশে, কোমরের নিচে, বা যৌনাঙ্গে বেশি দেখা যায়
-
শিশুদের ক্ষেত্রে মুখ, মাথার তালু ও হাত-পায়েও হতে পারে
সংক্রমণ কীভাবে হয়:
-
আক্রান্ত ব্যক্তির সঙ্গে থাকলে, ঘনিষ্ঠ শারীরিক যোগাযোগ
-
আক্রান্তের ব্যবহার করা কাপড়, বিছানার চাদর বা তোয়ালে ব্যবহার করলে
চিকিৎসা:
-
ডাক্তারের পরামর্শে প্রেস্ক্রিপশনযুক্ত স্ক্যাবিস প্রতিরোধী ক্রিম বা লোশন (যেমন: পারমেথ্রিন)
-
সব সদস্যকে একসাথে চিকিৎসা করানো জরুরি
-
পোশাক, বিছানার চাদর, তোয়ালে গরম পানিতে ধোয়া উচিত
স্ক্যাবিস প্রতিরোধের উপায়:
-
আক্রান্ত ব্যক্তি ও পরিবারের সকল সদস্যকে একসাথে চিকিৎসা করা
-
ব্যবহৃত জামাকাপড়, বিছানার চাদর, তোয়ালে ইত্যাদি গরম পানিতে ধুয়ে ধূপে শুকানো
-
আক্রান্ত ব্যক্তির ঘনিষ্ঠ সংস্পর্শ এড়িয়ে চলা
-
পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা
-
প্রয়োজনে ঘরের মেঝে বা ব্যবহৃত আসবাব পরিষ্কার করা
নিয়মিত গোসল করা।
সবশেষে বলবো সবাই পরিষ্কার এবং সচেতন থাকুন। সুস্থ্য থাকুন।
ক্যারিয়ার গঠনের পথচলা: সঠিক সিদ্ধান্ত হতে পারে সাফল্যের যাত্রা প্রথম ধাপ।
বর্তমান প্রতিযোগিতামূলক যুগে ক্যারিয়ার শুধু জীবিকা অর্জনের মাধ্যম নয়, বরং এটি একজন মানুষের পরিচয়, আত্মমর্যাদা ও জীবনের লক্ষ্যকে বাস্তবে রূপ দেওয়ার অন্যতম উপায়। তাই একজন শিক্ষার্থী হোক বা নবীন চাকরিপ্রার্থী, সবার কাছেই ক্যারিয়ার গড়ার সঠিক দিকনির্দেশনা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
📌 ক্যারিয়ার পরিকল্পনা কেন জরুরি?
অনেকেই ভাবে সময় এলেই কাজ পাওয়া যাবে বা জীবন নিজে থেকেই গড়ে উঠবে। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, পরিকল্পনা ছাড়া পথচলা মানেই অনিশ্চয়তায় ডুবে থাকা। ক্যারিয়ার পরিকল্পনা:
-
লক্ষ্য নির্ধারণে সহায়তা করে
-
নিজের দক্ষতা ও দুর্বলতা চিহ্নিত করতে সাহায্য করে
-
ভবিষ্যতের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় প্রস্তুত করে
🔍 কোন ক্যারিয়ারটা আমার জন্য?
সঠিক ক্যারিয়ার বেছে নিতে নিচের প্রশ্নগুলো নিজেকে করুন:
-
আমি কোন কাজে আনন্দ পাই?
-
কোন বিষয়ে আমি ভালো পারফর্ম করি?
-
আমার দীর্ঘমেয়াদী লক্ষ্য কী?
-
আমার মূল্যবোধ এবং পছন্দের সাথে কোন পেশা সামঞ্জস্যপূর্ণ?
আপনার আগ্রহ ও দক্ষতার ভিত্তিতে ক্যারিয়ার নির্বাচন করলে সেই পেশায় সফল হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেড়ে যায়।
🛠️ দক্ষতা গড়ার গুরুত্ব
শুধু ডিগ্রি থাকলেই হয় না—আজকের যুগ চায় দক্ষ জনশক্তি। কিছু গুরুত্বপূর্ণ দক্ষতা যা যেকোনো পেশায় সাহায্য করে:
-
যোগাযোগ ও উপস্থাপনার ক্ষমতা
-
প্রযুক্তিগত দক্ষতা (যেমন: ডিজিটাল মার্কেটিং, প্রোগ্রামিং, গ্রাফিক ডিজাইন)
-
সমস্যা সমাধানের কৌশল
-
দলগতভাবে কাজ করার যোগ্যতা
-
নেতৃত্বগুণ
🌱 ক্যারিয়ারে ধৈর্য ও মানসিকতা
সফল ক্যারিয়ার গড়ে তুলতে সময় লাগে। তাই:
-
হতাশ না হয়ে ছোট ছোট সাফল্যকে মূল্য দিন
-
ব্যর্থতা থেকে শিক্ষা নিন
-
সবসময় শেখার মানসিকতা রাখুন
-
নিজের মানসিক স্বাস্থ্য ও ভারসাম্য বজায় রাখুন
💡 কিছু পরামর্শ
-
প্রতিদিন ৩০ মিনিট সময় দিন নিজের দক্ষতা বাড়াতে
-
অভিজ্ঞদের পরামর্শ নিন
-
নেটওয়ার্ক তৈরি করুন—লিংকডইন, ইভেন্ট, কর্মশালা
-
নিজের একটি পোর্টফোলিও তৈরি করুন
-
সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে নিজেকে আপডেট রাখুন
শেষ কথা
একটি সফল ক্যারিয়ারের জন্য প্রয়োজন আত্মবিশ্বাস, পরিকল্পনা ও নিয়মিত চেষ্টা। আপনি যদি নিজের লক্ষ্য স্থির করেন এবং সেই অনুযায়ী কাজ করেন, তবে সফলতা শুধু সময়ের অপেক্ষা। মনে রাখবেন—ক্যারিয়ার একটি দীর্ঘমেয়াদি যাত্রা, যেখানে প্রতিটি পদক্ষেপ গুরুত্বপূর্ণ।