বিয়ে
হলো একটি সামাজিক বন্ধন। এটি একটি বৈধ চুক্তি যার মাধ্যমে নারী ও পুরুষের মধ্যে
দাম্পত্য সম্পর্ক স্থাপিত হয়। বিয়ে বিশ্বের সকল দেশের মানুষের সম্পর্ক স্থাপনের
একটি চুক্তি। তবে একেক দেশে এর একে রকম সংজ্ঞা, আচার অনুষ্ঠান, নিয়ম নিতি।এর
মাধ্যমে নারী পুরুষের বৈধ সম্পর্ক গড়ে উঠার পাশাপাশি বংশ রক্ষাও হয়ে থাকে। আমাদের
সমাজে বিবাহের জন্য যখন আলোচনা হয় তখন আমরা দেখি ছেলে মেয়ের পরিবার কেমন?, ছেলে কি
করে, উভয় পক্ষের সামাযিক মর্যাদা ইত্যাদি। কিন্তু আমাদের বিয়ের আগে আরও কিছু বিষয় জানা। যা নারী ও পুরুষ উভয়ের জন্য প্রয়োজন।
সময়ের
সাথে সাথে যেমন পরিবেশ ও জলবায়ুর পরিবর্তন হচ্ছে ঠিক তেমনি ভাবে মানুষের শরীরে দেখা দিচ্ছে আরও নানা ধরণের রোগও। বিজ্ঞান যত অগ্রসর হচ্ছে রোগের প্রভাবও পাল্লা
দিয়ে বাড়ছে। এমন কিছু রোগ আছে যেগুলো মানুষের শরীরে বাসা বাঁধে যা পরবর্তিতে নিজের
ও নতুন প্রজন্মের জন্য হুমকির সরুপ। তাই আমাদের উচিৎ বিয়ের আগে অন্য সকল কিছুর মত
বর কনের কিছু শারীরিক পরীক্ষা করে নেয়া। এতে করে সুখি দাম্পত্য জীবনের অনেক জটিলতা
থেকে দুরে থাকা যাবে। তেমনি কিছু রোগ ব্যধি নিয়ে আজকে আমার ছোট্ট জ্ঞানের প্রকাশ
করবো আপনাদের মাঝে। আধুনিক সমাজে আমরা অবস্য সকলেই এই সকল রোগ সম্পর্কে অবগত আছি।
তবুও আমি আপনাদের জন্য একটু গুছিয়ে মনে করিয়ে দেয়ার চেষ্টা করবো।
আমাদের
প্রত্যেক নারী পুরুষেরই এখন বিয়ের আগে রক্ত পরীক্ষাসহ কিছু পরীক্ষা করা প্রয়োজন।
যেমন থ্যালাসেমিয়া, হেপাটাইটি, অ্যানিমিয়া বা থাইরয়েড, কিডনি পরীক্ষা।
রক্তের গ্রুপ: বিয়ের আগে বর কণের রক্তের গ্রুপ পরীক্ষা করা খুবই প্রয়োজন। রক্তের গ্রুপের
ভিন্নতার কারণে পারিবারিক জীবনে অনেক ধরনের জটিলতা সৃষ্টি হয়। যদি নারী এবং
পুরুষের রক্তের গ্রুপ নেগেটিভ ও পজেটিভ হয়ে থাকে তবে তাদের সন্তান জন্মদানের সময়
কিছু কিছু জটিলতা তৈরি হতে পারে। এর ফলে গর্ভপাত ও শিশু মৃত্যুও হতে পারে।
তাই বিয়ের আগে রক্তের গ্রুপ পরীক্ষা করা
প্রয়োজন।
থ্যালাসেমিয়া: এই রোগের জীবানু অনেক মানুষের শরীরের লুকিয়ে থাকে। কিন্তু আমরা তা বুঝতে
পারি না।তবে যদি বর এবং কনের শরীরে এই রোগের জীবানু থাকে তবে তাদের যে সন্তান জন্ম
হবে তার এই রোগ আক্রান্ত হবে। এই রোগের ফলে রক্তের হিমোগ্লবিন কমে যায়। যার দরুণ
রক্তের লহিত কনিকা তৈরী হতে পারে না। ফতে রোগীকে প্রতি তিন থেকে আট সাপ্তাহ পর পর
রক্ত নিতে হয়। নিয়মিত রক্ত নেয়ার কারণে রোগীর হার্ট ও লিভার ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে
বা শরীরের অন্য কোন ক্ষতিও হতে পারে। শিশুর জন্মের পর পরই এই রোগের লক্ষণ প্রকাশ
পায় না। শিশুর বয়স যখন 1 বছরের মত হয় তখন তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে ফ্যাকাসে হয়ে
যায়, শিশুর দুর্বলতা দেখা দেয়, অবসাদ অনুভব করে, শ্বাসকষ্ট হয়, মুখমণ্ডল ফ্যাকাশে হয়ে যাওয়া, ত্বক হলদে হয়ে যাওয়া, মুখের হাড়ের বিকৃতি, ধীরগতিতে শারীরিক বৃদ্ধি, পেট বাইরের দিকে প্রসারিত হওয়া, গাঢ় রঙের প্রস্রাব ইত্যাদি সমস্যার প্রকাশ পায়। এ জন্য বিয়ের আগে
নারী পুরুষ উভয়ের উচিৎ পরীক্ষা করা।
হেপাটাইটিস: হেপাটাইটিস একটি মারাত্যক রোগ। এর ফলে মানুষের লিভারের
সমস্যা সহ লিভার অকেযো হয়ে যায়। এই জন্য প্রত্যেকের উচিৎ এর পরীক্ষা করে দেখা
হেপাটাইটিস-এ, বি, সি এর জীবানু আছে কিনা। নারী বা পুরুষের কারো শরীরের যদি এর
জীবানু থেকে থাকে তবে স্বামী বা স্ত্রীর মাধ্যমে একে অনের শরীরে এই রোগ ছড়াবে। আর
তাদের থেকে যে সন্তান জন্ম নিতে তার শরীর এই রোগে আক্রান্ত হবে। এর জন্য উচিৎ
বিয়ের আগে এর পরীক্ষা করা আর এর জন্য ভ্যাকসিন নিয়ে নেওয়া।
থাইরয়েড: এটি এমন একটি রোগ যা নারী বা পুরুষের শরীরে থাকলে তা সন্তান
জন্ম দানের সময় অনেক ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে। তাই বিয়ের আগেই এর পরীক্ষা করে নেওয়া
ভালো। এ ছাড়া অ্যানিমিয়া আক্রান্ত পাত্রীরও বিয়ের পর সন্তান নিতে গেলে অনেক সময়ই
সমস্যায় পড়তে হয়।
কিডনি: কিডনি আমাদের শরীরের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। তাই আমাদের
কিডনি ভালো রাখার জন্য সচেতন থাকতে হবে। বিয়ের আগে আমাদের উচিৎ এর পরীক্ষা করা।
যাতে করে জন্মের সন্তান নিরাপদ থাকে। কারন এই সমস্যা শিশুর শরীরে প্রবেশ করে। এ
জন্য আমাদের আগেই এর চিকিৎসা করে নেয়া বা সন্তান জন্মদানে সচেতন হওয়া।
এছাড়া আরো অনেক রোগ
আছে যেগুলো পরীক্ষা-নীরিক্ষা করে বিয়ের সিধান্ত নেয়া। যাতে করে ভবিষ্যত জীবন সুখী
ও সমৃদ্ধ হতে পারে। এইডস, মানসিক স্বাস্থ্য, সেক্সুয়াল হেলথ সমস্যা এবং ডয়াবেটিস
এগুলো সম্পর্কে অবগত হওয়া। এই পরীক্ষাগুলো করার পরে কোনো সমস্যা থাকলে চিকিৎসকের
পরামর্শে নিজেকে তৈরি করে বিয়ের পিড়িতে বসা উচিৎ।
তথ্য সূত্র: ইন্টারনেটের বিভিন্ন সূত্র থেকে।
No comments:
Post a Comment