নিপা ভাইরাস
বর্তমান সময়ে আমাদের দেশে চলছে শীত ঋতু। শীতের সময় আমাদের শরীরের নানা ধরনের রোগ ও সমস্যা দেখা দিয়ে থাকে। এমনি একটি হচ্ছে নিপা ভাইরাস। এটি একটি ভাইরাস জনিত রোগ। এর বাহক বাদুর। এই ভাইরাসের সন্ধান পাওয়া যায় প্রথম মালয়েশিয়ায়। ১৯৭৮ সালে মালয়েশিয়ায় এর পাদুরভাব দেখা দেয়। মালয়েশিয়ার নেজেরি সেমভিলান রাজ্যের সুংগাই নিপাহ নামক এক গ্রামে এর প্রথম দেখা দেয়। তাই এই গ্রামের নাম অনুসারে নিপা নামকরণ করা হয়। Dr. Chua Kaw Bing. এক এই ভাইরাস আবিষ্কার করেন।
যেভাবে ছড়ায়: বাদুড়ের মুখের লালা, মুত্র ও শ্বাসপ্রশ্বাসের মাধ্যমে এই ভাইরাস ছড়ায়। খেজুরের কাঁচা রস, বাদুরে খাওয়া ফলমুল এর মাধ্যমে মানুষের শরীরের এই ভাইরাস প্রবেশ করে। ভাইরাসটির কার্যকারী সংক্রামক হওয়ায় তা মানুষ থেকে মানুষের শরীরেও ছড়ায়। রাতের বেলা বাদুর যখন গাছের ফলমুল এবং খেজুরের রস খেতে যায় তখন তার মুখের লালা এর মধ্যে পড়ে ভাইরাসটি ছড়ায়।
রোগের লক্ষণ: এই ভাইরাস যখন মানুষের শরীরের প্রবেশ করে তখন আক্রান্ত ব্যক্তির জ্বরসহ মাথাব্যথা হয়ে থাকে। এছাড়াও খিঁচুনি, প্রলাপ বকা, অজ্ঞান হয়ে পারে। কোন কোন ক্ষেত্রে শ্বাসকষ্টও হয়ে থাকে। চিকিৎসকদের মতে এই রোগে আক্রান্ত প্রায় 70% ভাগ রোগী মারা যায়। তাই এর হাত থেকে বাঁচতে সচেতন থাকতে হবে।
সর্তকতা: নিপা ভাইরাস নিরাময়ের জন্য এখন পর্যন্ত তেমন কোন ওষুধ বা টিকা আবিষ্কার হয় নাই। কোন ব্যাক্তির শরীরের উপরের লক্ষণ গুলো দেখাদিলে যতদ্রুত সম্ভব চিকিৎসকের কাছে যাওয়া। নিপা ভাইরাস প্রতিরোধ করতে আমাদের কিছু সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে-
ক) কাঁচা খেজুরের রস খাওয়া যাবে না। খ) পাখি বা বাদুরের আধা খাওয়া কোন ফল খাওয়া বা ধরা থেকে বিরত থাকা।
গ) আক্রান্ত ব্যাক্তির শারীরিক সংস্পর্শ থেকে দুরে থাকা।
ঘ) রোগীর ব্যবহারের খাবারের পাত্র আলাদা করতে হবে।
ঙ) রোগীর সেবা যত্নের পার ভাল করে পরিষ্কার হওয়া।
চ) রোগীর কফ ও থুতু যেখানে সেখানে না ফেলে একটি পাত্রে রেখে তা পুড়িয়ে ফেলতে হবে।
চিকিৎসা: এখন পর্যন্ত এই রোগের তেমন কোন চিকিৎসা বের হয় নি। সঠিক ভাবে রোগীর সেবা যত্ন করলে রোগী ভাল হতে পারে। এর জন্য আতঙ্কিত না হয়ে সবাইকে সচেতন থাকতে হবে। আর আগ্রান্ত রোগীকে দ্রুত চিকিৎসার আওতায় আনতে হবে। এই রোগের হাত থেকে বাঁচতে সচেতনতাই প্রথম এবং প্রধান উপায়।
No comments:
Post a Comment